রাসেল কবির, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা।
সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি কালিগঞ্জ থানাকে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামে।
ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে কলেজছাত্র সোহাগ হোসেন বাবু এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য কতিপয় ব্যক্তি স্কুলছাত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য তার বাবাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিন চাঁচাই গ্রামে গেলে মামলা সূত্র এবং ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী, তার বাবা, মা, বড় বোনসহ স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের বিদেশ ফেরত ছবিলার রহমান মোড়লের ছেলে দক্ষিণ শ্রীপুর কুশুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগ হোসেন বাবু প্রতিবেশী গরীব, অসহায় ও দিনমজুর ব্যক্তির পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া শিশুকন্যাকে বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে।
এরপর বিয়ের আশ্বাসে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত সোহাগ হোসেন বাবু কয়েক মাস পর বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি এবং কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে।
এভাবে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বার ৬ মাস অতিবাহিত হলে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ঘটনাটি তার বাবা—মাকে খুলে বললে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে নিয়ে গত ২ ডিসেম্বর কালিগঞ্জে অবস্থিত যমুনা ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি করলে ২৮ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ধরা পড়ে।
ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযুক্ত কলেজছাত্র সোহাগ হোসেন বাবু বাড়ি হতে পালিয়ে যায়।
পরে সোহাগের পিতা ছবিলার রহমান স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে কৌশলে অন্তঃসত্ত্বা স্কুল ছাত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি প্রদান করে।
গত ৭ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে কলেজ ছাত্র সোহাগ হোসেন বাবুকে আসামি করে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করে(মামলা নং— ৫৪৫/২১)। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে রেকর্ড ভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তার চাচা আবু সাঈদ এবং গোলাম মোস্তফা সাংবাদিক দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে এবং বলে এখানে আপনাদের আসতে কে বলেছে।আমরা মামলায় দেখে নেব আপনারা যান।
কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নিকট বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আদালত থেকে কোন নির্দেশনা এখনও পায়নি। নির্দেশনা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।